সুনামগঞ্জ , বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাঙ্গুয়ার ‘দম যায় যায়’ অবস্থা দলগুলোর মতানৈক্য : মাঠে গড়াচ্ছে রাজনীতি পূর্ব ও পশ্চিম নতুনপাড়ার জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি শিশুশ্রম মুক্ত আদর্শ সুনামগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা বিষয়ে সভা দেখার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নয় পথে যেতে যেতে : পথচারী হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর ‘ফুল স্পিডে’ চলছে সংসদ নির্বাচনের কেনাকাটা ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্থান্তর ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর দুর্গম হাওরের ২২ হাজার শিশুকে সাঁতার শিখাচ্ছে সরকার পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব : নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নিয়েই নেপালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন সুশীলা কার্কি আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই

জামালগঞ্জের সাত গ্রামে নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়

  • আপলোড সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৮:০৭:১২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৮:৩৬:৪২ পূর্বাহ্ন
জামালগঞ্জের সাত গ্রামে নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়
আব্দুল্লাহ আল মামুন :: সুনামগঞ্জ জেলার হাওর জনপদের উপজেলা জামালগঞ্জ। এ উপজেলার ধান ও মৎস্য ভা-ার হিসেবে খ্যাতি থাকলেও শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক শিক্ষা বঞ্চিত রয়েছে হাজারো শিশু। জানাযায়, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ গ্রামে নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়। সুরমা নদীর তীরবর্তী মমিনপুর, উত্তর লক্ষ্মীপুর, হুসেনপুর, ইনসানপুর, জুনুপুর, মাছুমপুর ও মুসলিমপুর নিয়ে জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড। ইউপি সূত্রে জানাযায়, ১নং ওয়ার্ডের ৭ টি গ্রামের ৭৪৩ পরিবারে মোট জনসংখ্যা ৪৩৫৮ জন। এরমধ্যে ভোটার সংখ্যা ১৯৫৭ জন। ৭টি গ্রামে সহ স্রাধিক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা বঞ্চিত। এসব শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নেওয়ার নেই কোনো সুযোগ। এই ওয়ার্ডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় শিশুরা তাদের মৌলিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিরক্ষর থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ শিশু-কিশোর। শিক্ষার অভাবে বাড়ছে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ ও মাদকাসক্তির মতো অপরাধ। অভিভাবকরা জানান, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে বারবার যোগাযোগ করলেও হয়নি স্কুলের কোন ব্যবস্থা। এছাড়াও বিভিন্ন মহলে তদবির করলেও অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকদের। ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবকরা বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও ৭টি গ্রামে হয়নি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চোখের সামনে অন্য গ্রামের শিশুরা স্কুলে গেলেও নিজ সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন তাঁরা। কোন উপায় না পেয়ে মসজিদের মক্তব পর্যন্ত পড়িয়ে শিশুদের লাগিয়েছেন কৃষিসহ অন্যান্য কাজে। নতুন বাংলাদেশে শিশুদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়তে শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষা বঞ্চিত ৭টি গ্রামের হাজার শিশুর একমাত্র ভরসা মক্তব ও মাদ্রাসা। প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় অভিভাবকরা দিশেহারা। মমিনপুর গ্রামবাসী সূত্রে জানাযায়, মমিনপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ২০০০ সালে ৩৩ শতক জায়গা ক্রয় করেন গ্রামবাসী। মমিনপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে নামজারি করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় স্কুলের স্থাপনা নির্মাণ করার উদ্য্যোগ নেওয়া হলেও তাতে বাধা প্রদান করেন মমিনপুর গ্রামের মৃত ছাফির উদ্দিনের ছেলে আবু হানিফ গং। স্থানীয় পেশি শক্তির মাধ্যমে হানিফ জোর করে দখল করেছেন স্কুলের জায়গা। এবিষয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছেন শমসের আলী। মমিনপুর গ্রামের মুরুব্বি আবুল মিয়া বলেন, আমরা কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। আমাদের ছেলে মেয়ে স্কুলে যাবে, তারা লেখাপড়া করে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করবে। স্কুলই নাই, লেখাপড়া করবে কেমনে? একসাথে ৭ গ্রামে স্কুল নাই, ইতা কেউ দেখে না। ইলেকশন আইলে সকলে স্কুল দেয়; ইলেকশন চলে গেলে স্কুলের কথা কেউ মনে রাখে না। আমরার ছেলে-মেয়ে পড়ার জন্য স্কুলের জোর দাবি করতাছি। সাপ্তাহিক জামালগঞ্জ সংবাদের সম্পাদক অঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, জামালগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষার দুরাবস্থাসহ প্রয়োজনীয় স্কুল না থাকা আমাদের দারিদ্র্যতার মূল কারণ। আমার জানা মতে দশ সহস্রাধিক শিশু আছে ঝরে পড়া। যেসকল গ্রামে স্কুল নেই সেখানে আছে আরও তিন সহস্রাধিক শিশু। প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানের অভাবে সুনাগরিক গড়ে উঠছে না এ উপজেলায়। স্কুলবিহীন গ্রামগুলোতে প্রতি তিনশত শিশুর জন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা অতীব জরুরি। জামালগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পীযুষ কান্তি মজুমদার বলেন, মমিনপুর সহ ৭টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। ঐ গ্রামগুলোর শিশুরা দূর-দূরান্তের স্কুলে যায়। পাশাপাশি বিদ্যালয় না থাকায় অনেক শিশুই ঝরে পড়ে। মমিনপুর স্কুলের নামে জয়গা আছে। মমিনপুর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ বিষয়টি আমাকে অবগত করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুশফিকীন নূর বলেন, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে মমিনপুরসহ ৭ টি গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। যার কারণে শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে। মমিনপুর স্কুলের জায়গা নিয়ে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা আছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করব।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স